বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার গাছ বৈলাম

বৃক্ষকথা

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার গাছ কোনটি?
উত্তর একটাই বৈলাম। এর বৈজ্ঞানিক নাম Anisoptera scaphula. বৃক্ষটিকে উচ্চতায় অন্য কোনো গাছ ছাড়িয়ে না গেলেও বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বৃক্ষটি। গবেষকরা বলছেন, আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে বৃক্ষটি। যদিও বৈলাম বৃক্ষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে ৬৯ প্রজাতির গাছ। বৈলামের মতো বিপন্ন আরও ১২৮ প্রজাতির গাছ।
বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মাত্র ২৪টি বৈলাম বৃক্ষ রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানের রুমা বাজার ও কক্সবাজার জেলার ডুলাহাজরা বোমারীঘোনা এলাকায় রয়েছে এই প্রজাতির বৃক্ষের শেষ অস্তিত্ব। এসব এলাকার বৈলাম বৃক্ষ সংরক্ষণ করা না গেলে ইতিহাস হয়ে যাবে বৃক্ষটি। এর সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. রফিকুল হায়দার বলেন, 'দেশে আর মাত্র ২৪টি বৈলাম বৃক্ষ আছে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবে গাছটি।' আদিবাসীরা জুম চাষের প্রতি অধিক পরিমাণে ঝুঁকে পড়ায় এই গাছ নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে উচ্চতায় সর্বোচ্চ এই গাছ রক্ষায় বন অধিদপ্তরের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।
বিলুপ্ত ৬৯ প্রজাতির গাছগুলো হলো :
একসময় বাঁশপাতা গাছ দিয়েই তৈরি হতো পেনসিল ও ফটোফ্রেম। বর্তমানে এই গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় কাঠ আমদানি করা হয় পাকিস্তান থেকে। বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেওয়া তথ্যমতে, বাঁশপাতার মতো বিলুপ্ত হয়ে গেছে সুগন্ধী জাতীয় ধূপগাছ, লতাজাতীয় লতাবাঁশ, তমাল গাছ, ভাদি গাছ, গাব গাছ, ডাইস পাইরোস, হলদু (এডিনা কোর্ডিফোলিয়া) নাগেশ্বর, পুঁতিজাম, ডাকরুম, নারিকেলি, সিবিট গাছ, পেটের পীড়ার প্রতিষেধক শ্যামলতা ও গন্ধ ভাদালী, ঔষধি গাছ আপাং, ধনন্তরী ওষুধ অনন্তমূল ও অন্তমূল, কোয়াশিয়া সিনকোনা, (যা থেকে কুইনাইন তৈরি হয়) যষ্টিমধু, (কুচ) গজপিপলু, কালধুতুরা (মানসিক রোগের জন্য উপকারী), শালপানি, শতমূলী, নিটাম, ভূঁইকোমড়া, সর্পগন্ধা ও ব্রাহ্মিশাক।
এসব প্রজাতির গাছ বিলুপ্ত হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, 'বিলুপ্ত প্রজাতির একটি বড় অংশ গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। নির্বিচারে নিধনের ফলে এসব উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীতে ছোটকে সবাই অবজ্ঞা করে। ফলে বন জঙ্গল, বাড়ির আঙিনায় বেড়ে ওঠা উদ্ভিদ পরিচ্ছন্ন অভিযানে নির্বিচার বিলুপ্ত হচ্ছে।
বিপন্ন ২০ প্রজাতির গাছ :৬৯ বিলুপ্ত প্রজাতির পথ ধরে বর্তমানে বিপন্ন আরও ২০ প্রজাতির গাছ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো_ বৈলাম বৃক্ষ, কুকুরের কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত ঔষধি বৃক্ষ ডরিয়াম পুত্রংজীবা, বান্দরহোলা, ধলিগর্জন, বন আমড়া, চাপালিশ, ধারমারা, গিলাবাটন, জাওয়া বা বেরুলা, গোদা বৃক্ষ, কনক, মোচ, পারুল, বাজনা, বরুন, টিম্বার হিসেবে একসময়ের সর্বাধিক ব্যবহৃত পিতরাজ, শিলবাদী, টালি, উদাল ও বক্স বাদাম।
সূত্রঃ সমকাল
DP
DP

This is a short biography of the post author. Maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec vitae sapien ut libero venenatis faucibus nullam quis ante maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec.

No comments: