বাংলাদেশের বিপন্ন ফল ফলসা
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ : Plantae
(শ্রেণীবিহীন): Angiosperms
(শ্রেণীবিহীন): Eudicots
(শ্রেণীবিহীন): Rosids
বর্গ : Malvales
পরিবার : Malvaceae
উপপরিবার : Grewioideae
গণ : Grewia
ফলসা বাংলাদেশের একটি অপ্রচলিত ফল। এটি প্রধানত দক্ষিণ এশিয়ার ফল। পাকিস্তান থেকে কম্বোডিয়া পর্যন্ত এর দেখা মেলে। অন্যান্য ক্রান্তীয় অঞ্চলেও এর ব্যাপক চাষ হয়। ফলসা গাছ 'গুল্ম' বা ছোট 'বৃক্ষ', যা আট মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এর ফুল হলুদ, গুচ্ছাকারে থাকে। ফলসা ফল ড্রুপ জাতীয়, ৫-১২ মিলিমিটার ব্যাস বিশিষ্ট, পাকলে কালো বা গাঢ় বেগুনি রঙের হয়। ফলসা শব্দটি উর্দু ভাষা থেকে এসেছে (উর্দু: فالسہ )। বাংলা, হিন্দি, মারাঠি সহ পৃথীবির বহু ভাষাতে এটি ফলসা নামেই পরিচিত।
ভিটামিন সি ভরপুর ফলটির খাদ্যগুন দেওয়া হল
Value per – 100 gm
Nutrients: Water 80.8g
Energy 72 Kcal
Protein g 1.3
Total lipid (fat) g 0.9
Carbohydrate, by difference 14.7 g,
Fiber, total dietary 1.2 g
Calcium, 129 mg,Iron, 3.1 mg,Magnesium, 72 mg,Phosphorus, 39 mg,Potassium, 351 mg,Sodium, 4.4 mg,Copper, Cu mg 0.12
Vitamins: Vitamin C, total ascorbic acid mg 22,Niacin 0.3 mg
Other: Carotene, beta 419 mcg
*Values from Indian Council of Medical Research, National Institute of Nutrition
সবদেশে ফলসা নাম হলেও ভারতের কিছু আঞ্চলিক নাম নীচে দেওয়া হলও ।
Scientific Name:
Grewia asiatica
Other Names:
Phalsa (Hindi, Urdu, Marathi,Bengali)
Phulsa (Kannada)
Phutiki (Telegu)
Unnu (Tamil)
Chadicha (Malayalam)
Shukri (Gujarati)
আদিবাসী সাঁওতালরা ফলসার শিকড় বাতজনিত রোগে ব্যাবহার করে থাকে। বলা হয় বাকল চিনি পরিষ্কৃতকরনে, দড়িও বানানোতে ব্যাবহার হতো।এর পাতা ডায়রিয়া ও আমাশয়ে ব্যাবহার হয়ে থাকে। এর পাতা ত্বকের সর্বপ্রকার প্রদাহ, সানবাইট,কেটে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, একজিমাতে কাজে লাগে। রাতভর জলে ভিজিয়ে রাখা ফলসা পাতা বেঁটে প্রদাহে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। আন্টিবায়টিক এরও কাজ করে।একবীজপত্রী ফলসা বীজের তেল রিপ্রডাক্টিভ ডিসঅর্ডার এ ব্যাবহার হয়।
ফলসা গাছ সাধারনতঃ রৌদ্রস্নাত আবহাওয়ায় সর্বপ্রকার মাটীতেই জন্মায়।মাত্র ২ থেকে ৩ সপ্তাহের গ্রীষ্মের ফসল এটি আর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবহনে প্রায় অসম্ভব হবার কারনে ওষধি গুনে ভরপুর ফলটির পাল্প, জ্যাম ইত্যাদি তৈরি করে বাজারজাত করা হয়।একমাত্র যেখানে চাষ হয় তার আসেপাসে বাজারে, রাস্তার ধারেই মরশুমে এটি বিক্রি হতে দেখা যায়।
ফলসার শরবত বানানো হয় চিনি মিশিয়ে যা আস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে ব্যাবহার হয় এবং পাকস্থলি সর্বপরি শরীরকে ঠান্ডা রাখে ।ফলসার শরবত বানাবার প্রক্রিয়াঃ ৫ জনের জন্য
উপকরণ – ২৫০ গ্রাম ফলসা, ৩ টেবিল চামচ চিনি, ১ কাপ কুচোনো বরফ
প্রক্রিয়া- পরিস্কার জলে ফলসা ধুয়ে পিষে ছেকে নিয়ে ৩ গ্লাস ঠান্ডা জল আর ৩ চামচ মিশাতে হয়। একটি পাতিলেবুর রস ও কুচোনোবরফ দিয়ে পরিবেশন করুন।
ফলসার ওষধি পরিচিতি –
কাঁচা ফলসা শ্বসনতন্ত্র, হার্ট ও রক্ত সঞ্চালন সুনিয়ন্ত্রিত রাখতে সাহায্য করে।বিভিন্ন প্রদাহ থেকে আরাম দেয়। জ্বরজ্বর ভাবের চিকিৎসায় ফলটি ব্যাবহার হয়। পাঁকা ফলসা গরমের থেকে শরীরকে ঠান্ডা রাখে।এমনকি ঠোঁটের চিকিৎসাতেও ব্যাবহার হয়। ফলটির আন্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট থাকায় ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম করতে সাহায্য করে।পাকস্থলির ব্যাথায় কাজ দেয়।পাকা ফলের রস প্রস্রাব জনিত অনেক সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে। মাথাধরা, আসিডিটি,ত্বকের শুষ্কতা দূরীকরণ, বমিভাবসর্বোপরি রক্তাল্পতায় ভীষণ রকম কার্যকরী।
পেটের ব্যাথায় ক্যারম বীজ ৩ গ্রাম রোষ্টকরে ২৫ থেকে ৩০ মিলি হাল্কা গরম ফলসার রস এ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় উপশমের জন্য। প্রতিদিন ফলসার রস পান করলে হার্টের দুরবলতা,হজম জনিত পেটের ব্যাথা, বমিভাব, মস্তিস্ক দুর্বলতা,নিঃস্বাস জনিত সমস্যা, ঠান্ডা লাগার সমস্যা, ইউরিন সমস্যা নিয়ন্ত্রিত রাখা যায়। ব্লাডসুগার এর রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। ফুলের কুঁড়িকেও চিকিৎসকরা ওষধি হিসেবে ব্যাবহার করেন।
বিঃ দ্রঃ-ফলসা কে ওষধি হিসেবে ব্যাবহারের আগে আবশ্যই চিকিতসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
পাকিস্তানে ফলসা খুবই জানপ্রিয় এই কারনে কি এর শরবত শরীরকে সতেজ রাখে এবং রক্ত তৈরি করে।